সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা – অধ্যায় ১, শ্লোক ১

 শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা – অধ্যায় ১, শ্লোক ১ ধর্মক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে সমবেতা যুযুৎসবঃ। মামকাঃ পাণ্ডবাশ্চৈব কিমকুর্বত সঞ্জয়॥ ১॥ ধৃতরাষ্ট্র বললেন: "হে সঞ্জয়! ধর্মের ভূমি কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের ইচ্ছায় একত্রিত আমার পুত্রেরা (কৌরবরা) এবং পাণ্ডবেরা কী করল?" এই শ্লোকটি মহাভারতের "ভীষ্মপর্ব"-এ অবস্থিত শ্রীমদ্ভগবদগীতাের প্রথম শ্লোক। এখানে ধৃতরাষ্ট্র, কৌরবদের পিতা এবং হস্তিনাপুরের অন্ধ রাজা, তাঁর সারথী সঞ্জয়কে যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থা জানতে চাইছেন। এই প্রশ্ন মহাভারতের যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে করা হয়েছে, যখন উভয় পক্ষ কুরুক্ষেত্রে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। শ্লোকের  বিশ্লেষণ ধর্মক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে: "ধর্মের ক্ষেত্র" এবং "কুরুদের ভূমি"। কুরুক্ষেত্র কেবল একটি ভৌগোলিক স্থান নয়, এটি আধ্যাত্মিক ও নৈতিক সংঘাতের প্রতীকও বটে। এখানে "ধর্ম" এবং "অধর্ম"-এর মধ্যেকার লড়াই ঘটতে চলেছে।মহত্ত্ব: এই স্থানটি বৈদিক যজ্ঞ এবং ঋষিদের তপস্যার স্থান হিসেবে পরিচিত। তাই, যুদ্ধটিও ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘটিত হচ্ছে। সমবেতা যুযুৎসব "যুদ্ধের ইচ্ছায় একত্রিত"। এখানে উভয় পক্ষের ম...

গুরু ও শিষ্য: ধৈর্য, সাধনা ও প্রকৃত ইচ্ছার শিক্ষা

  গুরু ও শিষ্য: ধৈর্য, সাধনা ও প্রকৃত ইচ্ছার শিক্ষা হিমালয়ের পাদদেশে একটি নির্জন গুহায় এক জ্ঞানী গুরু বাস করতেন। তাঁর মুখে সবসময় একটি শান্ত হাসি লেগে থাকত, চোখ দুটো ছিল দীপ্তিমান এবং কণ্ঠে ছিল এক অভূতপূর্ব প্রশান্তি। বহু দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসত তাঁর আশ্রমে, তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান, জীবনের দিকনির্দেশনা ও আধ্যাত্মিক প্রশান্তির সন্ধান পেতে। তাঁর আশ্রমে অনেক শিষ্য ছিল, কিন্তু তাঁদের মধ্যে একজন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল — নাম ধরা যাক, অর্জুন। অর্জুন ছিল অত্যন্ত চঞ্চল এবং অধীর প্রকৃতির। সে সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি পেতে চাওয়ার অভ্যাসে অভ্যস্ত ছিল। সে বিশ্বাস করত, যত বেশি কঠোর পরিশ্রম করা যাবে, তত দ্রুত ফল পাওয়া যাবে। সে গুরুর কাছে এসে আশ্রমে থাকার অনুমতি চেয়ে বলেছিল, — “গুরুদেব, আমি জীবনের আসল অর্থ জানতে চাই। আমি জ্ঞানী হতে চাই, সত্য উপলব্ধি করতে চাই। অনুগ্রহ করে আমাকে শিক্ষা দিন।” গুরু তাকে আশ্রমে থাকার অনুমতি দেন। অর্জুন প্রতিদিন কঠোর সাধনা করত — ধ্যান, শাস্ত্রপাঠ, সেবাকর্ম—সবই নিষ্ঠার সঙ্গে করত। কিন্তু সমস্যা ছিল একটাই — সে ধৈর্য ধরতে পারত না। সে বারবার গুরুর কাছে এসে প্রশ্ন করত: — “গ...

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেরণা: “কর্মে মন দাও, ফল ঈশ্বরের হাতে”

  🌼 ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেরণা: “কর্মে মন দাও, ফল ঈশ্বরের হাতে” 🌼 শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতা—এটি কেবল একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, এটি এক মহৎ জীবনদর্শনের উৎস। যুগে যুগে জ্ঞানীরা, নেতা, সাধকরা এই মহাগ্রন্থ থেকে জীবনের পথে চলার জন্য দিশা পেয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম একটি মূল মন্ত্র হল: “কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।” বাংলা অনুবাদ: তোমার অধিকার শুধু কর্ম করার উপর, কখনোই তার ফলের উপর নয়। এই একটি বাক্যই জীবনকে বদলে দেওয়ার মতো শক্তিশালী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অর্জুনকে এই কথা বলেন, যখন অর্জুন তাঁর কর্তব্য থেকে পিছিয়ে যাচ্ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ তাকে বোঝান, জীবনের সঠিক পথে চলতে হলে আমাদের উচিত হবে ফলের আশা না করে, মনপ্রাণ দিয়ে কর্ম করে যাওয়া। 🎯 কেন ফলের চিন্তা না করে কেবল কর্মে মনোযোগ দেওয়া উচিত? আমরা যখন কোনো কাজ করি, তখন প্রায়শই আমাদের মন সেই কাজের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়েই ব্যস্ত থাকে—“সফল হব তো?”, “সম্মান পাব তো?”, “অর্থ আসবে তো?” এইসব ভাবনা আমাদের কর্মে ব্যাঘাত ঘটায়। আমরা চিন্তায় এতটাই ডুবে যাই যে কাজটাকেই ঠিকভাবে করা হয় না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, এই ধরণের ফলের আস...