সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিজের দুর্বলতা কে নিজের শক্তি বানাও



 আমাদের  জীবনে অনেক  সময় সমস্যা আসে  , আমরা ভেঙ্গে পড়ি নিরাশ হয়ে পরি । আমাদের এই সমস্যার জন্য ,কখনো অন্যকে ,কখনো ভগবান কে দোষ ,দেই । আমরা মনে করে আমাদের জীবনটা বৃথা ,  জীবনে কিছু করতে পারবো না । এই ভেবে আমরা চেষ্টা করা ছেড়ে দেই । কিন্তু আমরা ভুলে যাই এই পৃথিবীতে যারা সফলতা অর্জ্জন করেছেন তারা কিন্তু একবারে সফলতা পান নি , অনেক বার  বিফল হয়েছেন ,বার বার বিফল হয়েও হার না মেনে আবার চেষ্টা করেছেন আর এই চেষ্টা এই তাদেরকে সফল বানিয়েছে । 
নিজের দুর্বলতা কে নিজের শক্তি বানাও


আমরা তো এই পৃথিবীতে হাত , পা, সুস্থ শরীর নিয়ে এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছি , তবুও আমরা হার মেনে নেই । কিন্তু এই পৃথিবীতে কিছু    মানুষ আছে যারা এই পৃথিবীতে বিনা হাত, বা বিনা পাও নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন , কিন্তু তাদের এই দুর্বলতা কে নিজের শক্তি বানিয়ে সফল হয়েছেন । এমনেই একজন ব্যক্তি ছিলেন  Nick Vujicic । 

 Nick Vujicic জন্ম থেকেই তার হাত , পা ছিল না , কিন্তু তিনি তার এই দুর্বলতা কে নিজের শক্তি বানিয়ে জীবনে সফলতা অর্জন করেন । 

Nick Vujicic জন্ম ৪ ডিসেম্বর ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়াতে melbourne এ  জন্ম গ্রহণ করেন ।
জন্ম থেকেই Nick Vujicic , Phocomelia রুগে আক্রান্ত ছিলেন , এই রুগে আক্রান্ত মানুষ শরীর তো বিকাশ পায় কিন্তু হাত ও পাও এর বিকাশ হয় না । 

Nick Vujicic , Phocomelia এই রুগের কারণে জন্মের পর তার হাত ও পা ছিল না , জন্মের পর যখন নার্স Nick Vujicic মাকে এই খবর দেন যে তার ছেলে বিনা হাত ও পা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে , তার মা তাকে দেখতে ও চান নি , তাকে ৪ মাস পর্যন্ত কোলে নেন নি ।
নিজের দুর্বলতা কে নিজের শক্তি বানাও




 Nick Vujicic   ছোটবেলা  অনেক কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়েছে  , পড়াশুনা , কাজকর্ম্ম , খেলাধুলাতে অনেক অপমানিত হয়েছিল । তার কোনো বন্দু  ছিল না , তার সাথে কেউ বন্ধত্ব করতো না । তার স্কুলের সাথীরা তাকে নিয়ে পরিহাস করতো । 

জীবনে নিরাশ হয়ে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন । তিনি  ১০ বছর বয়সে বাথরুমে বাথ ট্যাবে ডুবে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন ।Nick Vujicic   বলেন ওই সময় আমার   জীবনটা আমার কাছে বের্থ মনে হচ্ছিলো । এই পৃথিবীতে বিনা উদ্দেশ্যে ও বিনা শক্তিতে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকে অনেক কষ্ট ।


কিন্তু তার মায়ের লেখা একটি চিঠি Nick Vujicic  এর জীবন কে পরিবর্ত্তন করে দেয় । তার মা লিখেছিলেন পত্রিকাতে প্রকাশিত একজন বিকলাঙ্গ যিনি তিনি তার বিকলাঙ্গের উপর জয়ী হয়েছিলেন ।

তিনি ১৩ বছর বয়সে বুজতে পেরেছিলেন যে এই পৃথিবীতে তিনি কেবল একই বিকলাঙ্গ নন তার মতো অনেক আছে । 

ভগবান তাকে জন্ম দিয়েছেন অন্যদেরকে অনুপ্রাণিত করার জন্য , অন্যকে উৎসাহিত করার জন্য এই কথা তিনি বুজতে পেরেছিলেন , এবং এটাই তার জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছিলেন । তার জন্য তিনি ভগবান কে ধন্যবান জানান ।

পিতা কম্পিউটার প্রোগ্রামার ছিলেন , Nick Vujicic  যখন ১৮ মাসের ছিলেন তার পিত তাকে জলে ছেড়ে দিতেন সাঁতার শেখার জন্য , যখন Nick Vujicic  বয়স ৬ বছর ছিল তার বাবা তাকে , পা ছিল না কিন্তু পায়ের পাতা ছিল তাও পায়ের পাতাতে একটি আঙ্গুল ছিল , এই একটি আঙ্গুল দিয়ে তাকে কম্পিউটার চালানো শিখালেন ।

Nick Vujicic  মা একটি ডিভিসি তার আঙুলের মধ্যে লাগিয়ে দিয়েছিলেন , এই ডিভাইস আঙুলে লাগিয়ে পেন ও পেন্সিল ধরে লিখা শিখলেন , এই পাতার এক আঙ্গুল দিয়ে ফুটবল খেলা , গালফ খেলা শিখলেন  । 

১৭ বছর বয়সে তিনি প্রথম ভাষণ দেন ।২১ বছর বয়সে  তিনি অক্কোউটিং এবং ফিন্যান্স গ্রাজুয়াতে হন । তারপর তিনি তার জীবন একজন মোটিভেশনাল স্পিকার হিসাবে তার জীবন শুরু করেন । Nick Vujicic  Attitude Is Altitude একটি কোম্পানি শুরু করেন, life without limits নামে একটি এন জি ও সুর করেন । 

পৃথিবীতে তিনি একজন মোটিভেশনাল স্পিকার হিসাবে পরিচয় পেলেন ।কেনিয়া মিয়াহারা নাম এক মহিলার সাথে তার বিবাহ হয় । একসময় Nick Vujicic ভাবতেন তার এই শারীরিক দুর্বলতার জন্য কোনো মেয়ে তার জীবনসংগী হবে , তার সাথে পুরো জীবন কাটাবে ইটা অসম্ভব । 

Nick Vujicic একজন পসিটিভ চিন্তা ভাবনা করা মানুষ । তিনি সুখ ও শান্তি কে বেশি মহত্ব দেন ।আজ তিনি বিশ্বর ৪৪ দেশ ঘুরেছেন । আজ Nick Vujicic পুরো বিশ্বকে কি ভাবে জীবনে বাঁচতে তা সেখান । 

তিনি সবাইকে বলেন , সবাই জেনে নিজেকে ভালোবাসতে শেখে , পরে আবার উঠে দাঁড়ানোর জন্য বলেন । তিনি বলেন -" আমি যদি জীবনে একজনকেও অনুপ্রাণিত করতে পারি তাহলে আমার জীবন সার্থক "।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রেরণার গল্প , কৃষকের অলস তিন ছেলে |Motivational Story in Bengali ,Farmer's lazy three sons

একটি গ্রামে এক কৃষক ছিল । সে মধ্যবিত্ত ছিল ,মধ্যবিত্তি হলেও সে অনেক প্ররিশ্রমী ছিল । সে প্ররিশ্রম করতে ভালোবাস্তো ।ঘরে বসে থাকতে চাইতো না । অলসভাবে বসে থাকতে সে ঘৃণা করতো । কৃষকের স্ত্রী - সেও খুব পরিশ্রমী । দিনরাত স্বামীর সংগে সে পরিশ্রম করে । এমন করে দিন যায় । কৃষকের তিন পুত্র । কিন্তু তিনটি পুত্র হলো খুব অলস । খায় - দায় ,গল্প করে ,গান গায় ঘুরে বেড়ায় - কারও কাজে মন নেই এতটুকু । কৃষক তাদের কাজ শেখালো । কি করে মাটি কুপাতে হয় ,মোই দিতে দিতে হয় , চাষ করতে হয় , বীজ বুনতে হয় ,সব শিখলো তারা । কিন্তু কেউ কাজ করতো না । তারা জানতো সব, কিন্তু করতো না কিছু । গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াতে তারা খুব ভালোবাসে । একদিন কৃষক গিন্নি কৃষকে বললো - শুনছ  গো ?- কি বলছো ? দেখছো ছেলেদের কান্ড ? হ্যাঁ ।  ছেলেরা ওরকম কুরে হলে তো দুদিনে বসে খেয়ে সব উড়িয়ে দেবে । তারপর কি হবে ? কৃষক চুপ করে রইলো । কিছুক্ষণ পরে শুধু একটু হেসে বললো - ঠিক সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে । এমন হবে দিন যায় । কৃষক গিন্নি স্বামীর কোথায় চুপ করে থাকে ।  দেখতে দেখতে কৃষক বৃদ্ধ হয়ে পড়লো । তখন সে একদিন স্ত্রীকে ডেকে বললো -...

অনুপ্রেরণামূলক গল্প গৌতম বুদ্ধ Inspirational Story Gautam Buddha

একবার গৌতম বুদ্ধ ,বুদ্ধ ধর্মের শিক্ষা প্রচারের জন্য গ্রাম গ্রাম শহর শহর নিজের শিষ্য দেড় নিয়ে ঘুরছিলেন ,পুরোদিন ঘুরতে ঘুরতে গৌতম বুদ্ধের জল পিপাসা পেয়ে গেলো ,জল পিপাসা এতই বেড়ে গেলো যে তিনি আর সহ্য করতে পড়তে ছিলেন না । তাই তিনি তার একজন শিষ্য কে ডেকে বললেন যে তার অনেক পিপাসা পেয়েছে তাই তার জন্য জল আনার জন্য । শিষ্য গুরুর আদেশে জল আনার জন্য গ্রামের ভিতরে গেলো ,গ্রামের মধ্যে দিয়ে একটি নদী বইছিল । কিন্তু সেই নদীতে গ্রামের সবাই কাপড় ধুইছিলো ,কেউ গরু ,মহিষ কে স্নান করাচ্ছিল ,তাই নদীর জল অপরিস্খার ছিল ,তাই শিষ্য চিন্তা করলো এই জল তো অপররিস্খার তার গুরুদেবের জন্য এই  অপরিস্খার জল নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না ,তাই শিষ্য জল না নিয়ে খালি হাতে চলে গেলো ,গৌতম বুদ্ধা যখন শিষ্য কে খালি হাথে চলে আসতে দেখেন তখন খালি হাতে আসার কারণ জিগ্গেস করেন ,তখন শিষ্য পুরো কাহিনী বলেন ।  এইদিকে গুরুদেবের পিপাসাতে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে ,গৌতম বুদ্ধা তখন আরেকজন শিষ্যকে জল আনার জন্য বলেন তখন সেই শিষ্য একটি   মাটির পাত্রতে পরিস্খার জল নিয়ে আসে ,তা দেখে গৌতম বুদ্ধা অভাক হয়ে গেলেন এবং এব...

গৌতম বুদ্ধের অনুপ্রেরণার কাহিনী । জীবন বদলে দেবে এই কাহিনী

  এক গরিব দুঃখী বেক্তির জীবন পরিবর্তনের কাহিনী ।.   আমরা জীবনে এই নিয়ে দুঃখিত থাকি যে  ইহার কারণ কি ?আমরা সবাই এটাই সবসময় মনে করে থাকি ,আমি  অন্যদের থেকে অনেক দুঃখিত ,অনেক কষ্ট করছি ,জীবনে কষ্ট সবচেয়ে বেশি আমার । অন্যরা আমার থেকে অনেক সুখে আছে ,শান্তিতে আছে , কিন্তু আমাদের এই চিন্তা ভুল । ভগবান আমাদের জন্মের সাথে সাথে জীবনে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার জন্য যা প্রয়োজন সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন । ভগবান গৌতম বুদ্বের এই গল্প থেকে বুজতে পারবো । গৌতম বুদ্ধ  একবার  তার শিষ্যদের সাথে একটি গ্রামে গিয়েছিলেন । সেই গ্রামের লোকেরা তাদের সমষ্যা নিয়ে গৌতম বুদ্ধের কাছে যেত এবং তাদের সমস্যার সমাধান নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফায়ার যেত । ওই গ্রামের রাস্তার ধরে একটি লোক বসে থাকতো এবং গৌতম বুদ্বের কাছে আসা প্রতিটি লোককে খুব মনোযোগ সহকারে  লক্ষ্য  করতো , সে এটা দেখে খুব অবাক হতো যে লোকতো  আসে অনেক মন খারাপ নিয়ে , কিন্তু যখন তারা গৌতম বুদ্ধের দর্শন করে ফিরত তারা অনেক খুশি থাকত , এবং মুখে থাকতো একটা হাসি ।  তাই গরিব ব্যক্তিটি মনে মনে ভাবলো যদি আমিও আমার সমস্যার কথা গৌত...