সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কর্মের উপর নির্ভর করে সর্গ ও নরকের দ্বার


আমাদের কর্মই আমাদের জীবনের সুখ ,শান্তি ও দুঃখ ,কষ্ট নির্ভর করে । আমরা মনে করি জীবনে পূজা পার্ব্বণ করে মৃত্যুর পর স্বর্গ লাভ করবো ,কিন্তু ইহা আমাদের ভুল ধারণা ।

কর্মের উপর নির্ভর করে সর্গ ও নরকের দ্বার


 আর স্বর্গ ও নরক বলে কোনো কিছু হয় না ,এই পৃথিবীতে এই স্বর্গ আর এই পৃথিবীতে এই নরক ,এই জন্মেই আমরা স্বর্গের ও নরকের সুখ দুঃখ ল্যাব করে থাকি । 


আমাদের কর্মের সাহায্যে আমরা এই জন্মেই নরক ও স্বর্গের ফল ভুগে থাকি , যদি আমরা কর্ম ভালো করি , তাহলে এই জীবন এই আমরা স্বর্গের সুখ পেয়ে থাকি ,আর যদি আমাদের কর্ম খারাপ হয়ে থাকে তাহলে আমরা এই জন্মেই  আমাদের কাছে নরক ।

কর্মের উপর নির্ভর করে সর্গ ও নরকের দ্বার


 ভগবান বুদ্ধা এর একটি কাহিনী বলছি ।  একটি গ্রামে এক ধোনি ব্যাক্তি ছিল , একদিন হটাৎ তার পিতা হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন । পিতার মৃত্যুর পর পিতার আত্মার শান্তির জন্য ও স্বর্গ লাভের জন্য পূজা করবেন তার জন্য তিনি একজন মহৎ পুরোহিতের কাছে যান ,



কিন্তু সেই পুরোহিত তাকে পরামর্শ দেন , তিনি ভগবান বুদ্ধ এর কাছে যাওয়ার জন্য ,তার থেকে কেউ জ্ঞানী ,গুণী  ও মহৎ হতে পারে না । তাই লোক টি চিন্তা করলো যে মহাত্মা বুদ্ধ একজন পরম পূজনীয় নিশ্চয় তার পিতার পূজা করলে তার পিত স্বর্গ লাভ হবেই । 


তাই সেই ব্যক্তি বুদ্ধের কাছে গিয়ে তাকে বললেন - " হে ভগবান আমি আপনার কাছে এক প্রার্থনা নিয়ে এসেছি ,যদি আপনি আমার পিতার মৃত্যুর অন্ত্যিম পূজাটি করেন তাহলে আমার পিতার আত্মা শান্তি পাবেন ও তার আত্মা স্বর্গ লাভ করবে " । 
কর্মের উপর নির্ভর করে সর্গ ও নরকের দ্বার


এই ব্যক্তির কথা শুনে মহাত্মা বুদ্ধ লোকটিকে বললেন - " যাও গিয়ে এক ঘটি ভর্তি পাথর এবং এক ঘটি ভর্তি ঘী  নিয়ে এসো ", মহাত্মা বুদ্ধের কথা শুনে লোকটি দৌড়ে গিয়ে এক ঘটি ভর্তি পাথর এবং এক ঘটি ভর্তি ঘী নিয়ে এলো । 


মহাত্মা বুদ্ধ এইবার লোকটিকে বললেন যাও ,এবার এই দুটো ঘটি কে নদীতে ভাসিয়ে দেয় এবং তার সাথে মন্ত্র উচ্চারণ যেন করতে থাকে আর যতক্ষণ পর্যন্ত ঘটি গুলো নদীর জলে ডুবে না যায় , মহাত্মা বুদ্ধ এর কথা মতো লোকটি মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে ঘটি দুটো কে নদীতে ভাসিয়ে দিলো । 


কিছুক্ষন পর পাথরের ভর্তি ঘটিটা জলে ঢুবে গেলো ,কিন্তু মাখন ভর্তি ঘটিটা জলে ডুবলো না ।
এই কথা এসে লোকটি মহাত্মা বুদ্ধ কে বললো ।


মহাত্মা বুদ্ধ তখন লোকটিকে বললেন - "যাও এবার গিয়ে সেই পুরোহিত কে নিয়ে বলো যে সে যেন মন্ত্র উচ্চারণ করে মাখন ভর্তি ঘটি কে জলে ডুবিয়ে দেয় এবং পাথর ভর্তি ঘটি কে জলের উপর ভাসিয়ে তুলে দেয় "।


তখন লোকটি মহাত্মা বুদ্ধ  কে বললো _" ভগবান ,কোনো পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে মাখন ভর্তি ঘটিকে জলের নিচে এবং পাথর ভর্তি ঘটি কে জলের উপর ভাসিয়ে উপরে তুলতে পারবে না "।

তখন বুদ্ধ লোকটিকে বললেন যে -" ঠিক , যে ভাবে মন্ত উচ্চারণ করে ঘটি দুটোকে জলে ডুবানো যাবে না সেই ভাবে ,যতই মন্ত্র উচ্চারণ করে , তপস্যা করে , পূজা করে , কেউ সর্গ বা নরক লাভ  করতে পারে না ।
কর্মের উপর নির্ভর করে সর্গ ও নরকের দ্বার


মানুষ তার নিজের কর্মের উপর নির্ভর করে তার সর্গ ও নরক প্রাপ্তি । যে লোক ভালো কাজ করে অন্যের জন্য ভালো কাজ করে করে ,তার জীবন ভালো হয়ে উঠবে ,এবং এই পৃথিবীতে সে স্বর্গের সুখ  লাভ করে  । 


আর যে লোক কু - কর্ম করবে , অন্যের ক্ষতি করবে ,তার জীবন কোনো দিন ভালো যাবে না , আর এই পৃথিবীতে তাকে নরকের মতো দুঃখ - কষ্ট ভোগ করতে হবে ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রেরণার গল্প , কৃষকের অলস তিন ছেলে |Motivational Story in Bengali ,Farmer's lazy three sons

একটি গ্রামে এক কৃষক ছিল । সে মধ্যবিত্ত ছিল ,মধ্যবিত্তি হলেও সে অনেক প্ররিশ্রমী ছিল । সে প্ররিশ্রম করতে ভালোবাস্তো ।ঘরে বসে থাকতে চাইতো না । অলসভাবে বসে থাকতে সে ঘৃণা করতো । কৃষকের স্ত্রী - সেও খুব পরিশ্রমী । দিনরাত স্বামীর সংগে সে পরিশ্রম করে । এমন করে দিন যায় । কৃষকের তিন পুত্র । কিন্তু তিনটি পুত্র হলো খুব অলস । খায় - দায় ,গল্প করে ,গান গায় ঘুরে বেড়ায় - কারও কাজে মন নেই এতটুকু । কৃষক তাদের কাজ শেখালো । কি করে মাটি কুপাতে হয় ,মোই দিতে দিতে হয় , চাষ করতে হয় , বীজ বুনতে হয় ,সব শিখলো তারা । কিন্তু কেউ কাজ করতো না । তারা জানতো সব, কিন্তু করতো না কিছু । গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াতে তারা খুব ভালোবাসে । একদিন কৃষক গিন্নি কৃষকে বললো - শুনছ  গো ?- কি বলছো ? দেখছো ছেলেদের কান্ড ? হ্যাঁ ।  ছেলেরা ওরকম কুরে হলে তো দুদিনে বসে খেয়ে সব উড়িয়ে দেবে । তারপর কি হবে ? কৃষক চুপ করে রইলো । কিছুক্ষণ পরে শুধু একটু হেসে বললো - ঠিক সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে । এমন হবে দিন যায় । কৃষক গিন্নি স্বামীর কোথায় চুপ করে থাকে ।  দেখতে দেখতে কৃষক বৃদ্ধ হয়ে পড়লো । তখন সে একদিন স্ত্রীকে ডেকে বললো -...

অনুপ্রেরণামূলক গল্প গৌতম বুদ্ধ Inspirational Story Gautam Buddha

একবার গৌতম বুদ্ধ ,বুদ্ধ ধর্মের শিক্ষা প্রচারের জন্য গ্রাম গ্রাম শহর শহর নিজের শিষ্য দেড় নিয়ে ঘুরছিলেন ,পুরোদিন ঘুরতে ঘুরতে গৌতম বুদ্ধের জল পিপাসা পেয়ে গেলো ,জল পিপাসা এতই বেড়ে গেলো যে তিনি আর সহ্য করতে পড়তে ছিলেন না । তাই তিনি তার একজন শিষ্য কে ডেকে বললেন যে তার অনেক পিপাসা পেয়েছে তাই তার জন্য জল আনার জন্য । শিষ্য গুরুর আদেশে জল আনার জন্য গ্রামের ভিতরে গেলো ,গ্রামের মধ্যে দিয়ে একটি নদী বইছিল । কিন্তু সেই নদীতে গ্রামের সবাই কাপড় ধুইছিলো ,কেউ গরু ,মহিষ কে স্নান করাচ্ছিল ,তাই নদীর জল অপরিস্খার ছিল ,তাই শিষ্য চিন্তা করলো এই জল তো অপররিস্খার তার গুরুদেবের জন্য এই  অপরিস্খার জল নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না ,তাই শিষ্য জল না নিয়ে খালি হাতে চলে গেলো ,গৌতম বুদ্ধা যখন শিষ্য কে খালি হাথে চলে আসতে দেখেন তখন খালি হাতে আসার কারণ জিগ্গেস করেন ,তখন শিষ্য পুরো কাহিনী বলেন ।  এইদিকে গুরুদেবের পিপাসাতে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে ,গৌতম বুদ্ধা তখন আরেকজন শিষ্যকে জল আনার জন্য বলেন তখন সেই শিষ্য একটি   মাটির পাত্রতে পরিস্খার জল নিয়ে আসে ,তা দেখে গৌতম বুদ্ধা অভাক হয়ে গেলেন এবং এব...

গৌতম বুদ্ধের অনুপ্রেরণার কাহিনী । জীবন বদলে দেবে এই কাহিনী

  এক গরিব দুঃখী বেক্তির জীবন পরিবর্তনের কাহিনী ।.   আমরা জীবনে এই নিয়ে দুঃখিত থাকি যে  ইহার কারণ কি ?আমরা সবাই এটাই সবসময় মনে করে থাকি ,আমি  অন্যদের থেকে অনেক দুঃখিত ,অনেক কষ্ট করছি ,জীবনে কষ্ট সবচেয়ে বেশি আমার । অন্যরা আমার থেকে অনেক সুখে আছে ,শান্তিতে আছে , কিন্তু আমাদের এই চিন্তা ভুল । ভগবান আমাদের জন্মের সাথে সাথে জীবনে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার জন্য যা প্রয়োজন সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন । ভগবান গৌতম বুদ্বের এই গল্প থেকে বুজতে পারবো । গৌতম বুদ্ধ  একবার  তার শিষ্যদের সাথে একটি গ্রামে গিয়েছিলেন । সেই গ্রামের লোকেরা তাদের সমষ্যা নিয়ে গৌতম বুদ্ধের কাছে যেত এবং তাদের সমস্যার সমাধান নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফায়ার যেত । ওই গ্রামের রাস্তার ধরে একটি লোক বসে থাকতো এবং গৌতম বুদ্বের কাছে আসা প্রতিটি লোককে খুব মনোযোগ সহকারে  লক্ষ্য  করতো , সে এটা দেখে খুব অবাক হতো যে লোকতো  আসে অনেক মন খারাপ নিয়ে , কিন্তু যখন তারা গৌতম বুদ্ধের দর্শন করে ফিরত তারা অনেক খুশি থাকত , এবং মুখে থাকতো একটা হাসি ।  তাই গরিব ব্যক্তিটি মনে মনে ভাবলো যদি আমিও আমার সমস্যার কথা গৌত...