আমাদের কর্মই আমাদের জীবনের সুখ ,শান্তি ও দুঃখ ,কষ্ট নির্ভর করে । আমরা মনে করি জীবনে পূজা পার্ব্বণ করে মৃত্যুর পর স্বর্গ লাভ করবো ,কিন্তু ইহা আমাদের ভুল ধারণা ।
আর স্বর্গ ও নরক বলে কোনো কিছু হয় না ,এই পৃথিবীতে এই স্বর্গ আর এই পৃথিবীতে এই নরক ,এই জন্মেই আমরা স্বর্গের ও নরকের সুখ দুঃখ ল্যাব করে থাকি ।
আমাদের কর্মের সাহায্যে আমরা এই জন্মেই নরক ও স্বর্গের ফল ভুগে থাকি , যদি আমরা কর্ম ভালো করি , তাহলে এই জীবন এই আমরা স্বর্গের সুখ পেয়ে থাকি ,আর যদি আমাদের কর্ম খারাপ হয়ে থাকে তাহলে আমরা এই জন্মেই আমাদের কাছে নরক ।
ভগবান বুদ্ধা এর একটি কাহিনী বলছি । একটি গ্রামে এক ধোনি ব্যাক্তি ছিল , একদিন হটাৎ তার পিতা হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন । পিতার মৃত্যুর পর পিতার আত্মার শান্তির জন্য ও স্বর্গ লাভের জন্য পূজা করবেন তার জন্য তিনি একজন মহৎ পুরোহিতের কাছে যান ,
কিন্তু সেই পুরোহিত তাকে পরামর্শ দেন , তিনি ভগবান বুদ্ধ এর কাছে যাওয়ার জন্য ,তার থেকে কেউ জ্ঞানী ,গুণী ও মহৎ হতে পারে না । তাই লোক টি চিন্তা করলো যে মহাত্মা বুদ্ধ একজন পরম পূজনীয় নিশ্চয় তার পিতার পূজা করলে তার পিত স্বর্গ লাভ হবেই ।
তাই সেই ব্যক্তি বুদ্ধের কাছে গিয়ে তাকে বললেন - " হে ভগবান আমি আপনার কাছে এক প্রার্থনা নিয়ে এসেছি ,যদি আপনি আমার পিতার মৃত্যুর অন্ত্যিম পূজাটি করেন তাহলে আমার পিতার আত্মা শান্তি পাবেন ও তার আত্মা স্বর্গ লাভ করবে " ।
এই ব্যক্তির কথা শুনে মহাত্মা বুদ্ধ লোকটিকে বললেন - " যাও গিয়ে এক ঘটি ভর্তি পাথর এবং এক ঘটি ভর্তি ঘী নিয়ে এসো ", মহাত্মা বুদ্ধের কথা শুনে লোকটি দৌড়ে গিয়ে এক ঘটি ভর্তি পাথর এবং এক ঘটি ভর্তি ঘী নিয়ে এলো ।
মহাত্মা বুদ্ধ এইবার লোকটিকে বললেন যাও ,এবার এই দুটো ঘটি কে নদীতে ভাসিয়ে দেয় এবং তার সাথে মন্ত্র উচ্চারণ যেন করতে থাকে আর যতক্ষণ পর্যন্ত ঘটি গুলো নদীর জলে ডুবে না যায় , মহাত্মা বুদ্ধ এর কথা মতো লোকটি মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে ঘটি দুটো কে নদীতে ভাসিয়ে দিলো ।
কিছুক্ষন পর পাথরের ভর্তি ঘটিটা জলে ঢুবে গেলো ,কিন্তু মাখন ভর্তি ঘটিটা জলে ডুবলো না ।
এই কথা এসে লোকটি মহাত্মা বুদ্ধ কে বললো ।
মহাত্মা বুদ্ধ তখন লোকটিকে বললেন - "যাও এবার গিয়ে সেই পুরোহিত কে নিয়ে বলো যে সে যেন মন্ত্র উচ্চারণ করে মাখন ভর্তি ঘটি কে জলে ডুবিয়ে দেয় এবং পাথর ভর্তি ঘটি কে জলের উপর ভাসিয়ে তুলে দেয় "।
তখন লোকটি মহাত্মা বুদ্ধ কে বললো _" ভগবান ,কোনো পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে মাখন ভর্তি ঘটিকে জলের নিচে এবং পাথর ভর্তি ঘটি কে জলের উপর ভাসিয়ে উপরে তুলতে পারবে না "।
তখন বুদ্ধ লোকটিকে বললেন যে -" ঠিক , যে ভাবে মন্ত উচ্চারণ করে ঘটি দুটোকে জলে ডুবানো যাবে না সেই ভাবে ,যতই মন্ত্র উচ্চারণ করে , তপস্যা করে , পূজা করে , কেউ সর্গ বা নরক লাভ করতে পারে না ।
মানুষ তার নিজের কর্মের উপর নির্ভর করে তার সর্গ ও নরক প্রাপ্তি । যে লোক ভালো কাজ করে অন্যের জন্য ভালো কাজ করে করে ,তার জীবন ভালো হয়ে উঠবে ,এবং এই পৃথিবীতে সে স্বর্গের সুখ লাভ করে ।
আর যে লোক কু - কর্ম করবে , অন্যের ক্ষতি করবে ,তার জীবন কোনো দিন ভালো যাবে না , আর এই পৃথিবীতে তাকে নরকের মতো দুঃখ - কষ্ট ভোগ করতে হবে ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন