সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Swami Vivekananda, Birth and Childhood

 


Swami Vivekananda, Birth and Childhood

স্বামী বিবেকানন্দের পূর্ব নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত । কলকাতার শিমুলিয়া পল্লীর কায়স্ত পরিবারে ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ১২ জানুয়ারী জন্ম গ্রহণ করেন । স্বামী বিবেকানন্দের পিতার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত মাতার নাম ছিল ভুবেনেশ্বরী । পিতা বিশ্বনাথ দত্ত হাইকোর্ট এর এটর্নি ছিলেন । নরেন্দ্রনাথের পিতামহের্ নাম ছিল দুর্গগাচরণ দত্ত ,একমাত্র পুত্র বিশ্বনাথ দত্ত এর জন্মের পর পঁচিশ বছর বয়সে তিনি ভগবান লাভের জন্য চিরতরে গৃহত্যাগ করে সন্ন্যাসী হয়েছিলেন ।

Swami Vivekananda, Birth and Childhood


 নরেন্দ্রনাথের জন্মের পূর্বে ভুবেনেশ্বরীদেবী  একটি পুত্র এবং দুটি কন্যা লাভ করলেও তাদের ভিতর দুটি কন্যা মাত্র জীবিত ছিল । তাই সে সময় ভুবেনেশ্বরী দেবী পুত্র লাভের জন্য শিবের আরাধনা শুরু করেন । কাশিতে একজন রোজ বীরেশ্বর শিবের পূজা দিতে বলেন ।তার পর নরেন্দ্রনাথ এর জন্ম হয় । বীরেশ্বর শিবের প্রসাদে পুত্রলাভ করেছেন ,এই বিস্বাসে ভুবেনেশ্বরী দেবী পুত্র এর নাম রাখলেন বীরেশ্বর; পরে অন্যপ্রশ্নের সময় নামকরণ হয় নরেন্দ্রনাথ ।তবে বাড়িতে বিলে নাম পরিচিত ছিলেন ।
            
                                   ছেলেবেলায় নরেন্দ্র নাথ খুব দুরন্ত ছিলেন । যখন রেগে যেতেন ,ঘরের জিনিস পত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দিতেন। ভয় দেখিয়ে বা শাসন করে তাকে শান্ত করা যেত না ,তখন মাতা  ভুবেনেশ্বরী তাকে শান্ত করার জন্য শিব শিব বলে ঠান্ডা জল মাথার মধ্যে ঢেলে দিতেন ,এতে নরেন্দ্র নাথ শান্ত হয়ে যেতেন ।

Swami Vivekananda, Birth and Childhood

                  নরেন্দ্র নাথের বাল্য কাল থেকেই প্রচন্দ সাহস ছিল ,কোনো কিছুতেই ভয় পেতেন না । একবার তিনি ছুটবেলা তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে চাঁপাগাছে খেলা করছিলেন তা দেখে একজন প্রতিবেশী দেখলেন যে বাঁচারা যে ভাবে খেলা করছে তাতে তাদের আঘাত লাগতে পারে ,তাই তিনি নরেন্দ্রনাথদের ভয় দেখানোর জন্য বলেন ,এই চাঁপাগাছে ব্রম্মদৈত্ত আছে ,যে গাছে উঠবে তার ঘাড় মটকে দেবে ।তিনি ভেবেছিলেন এই কথা শুনে নরেন্দ্র নাথ ভয় পেয়ে যাবেন আর খেলা বন্ড করে দেবে ,এই ভেবে প্রতিবেশী চলে গেলো ।

কিন্তু তা হলো না  নরেন্দ্র নাথ ভয় পেলেন না ,তিনি আবার গাছে উঠে খেলা করতে শুরু করেন ,তার সাথীরা ভয় পেলে তিনি বলেন ,সবার কথায় বিশ্বাস করতে নেই ,যদি এই গাছে ব্রম্মদত্য থাকতো তাহলে এতদিনে আমাদের ঘর মতকে দিতো ।
                                                                        একবার খেলার মাঠে নরেন্দ্র নাথ দোলনার কাঠ উঠাইতেছিলেন ,কাঠটি ভারী বলে নরেন্দ্র নাথের সঙ্গী সাথীরা সবাই মাইল উঠানোর চেষ্টা করছিলেন ,তা দেখে একজন পথচারী ইংরেজি নাবিক তাদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে ,কিন্তু এই কাঠটি ছুতে গিয়ে লোকটার  মাথায় পরে যায় ,লোকটি অজ্ঞান হয়ে যান ,এবং ক্ষত স্থান থেকে অনেক রক্ত বের হতে থাকে , যে বালকরা ও রাস্তায় লোকজন দাঁড়িয়ে যে মজা দেখতেছিলেন তারা সবাই পরিস্তিতি দেখে সরে পরে ,কিন্তু নরেন্দ্র নাথ ও তার দুই সাথী তারা তখন ,লোকটিকে মাথায় পট্টি বেঁধে ,মুখে জল দিয়ে ,বাতাস করে লোকটির জ্ঞান ফিরিয়ে আনেন , এবং বন্ধুদের সহায়তায় ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যান ।

নরেন্দ্র নাথ ধ্যান খেলা খুব ভালো বসতে ,কখনো কখনো ধ্যান করতে করতে এমন মগ্ন হয়ে যেতেন যে ,অন্য কিছুর আওয়াজ শুনতে এই পেতেন না ,একবার  নরেন্দ্র নাথ তার সঙ্গী সাথীদের সাথে ধ্যান ধ্যান  খেলার  সময় ,ঘ্যান এ এমন মগ্ন হয়ে যান যে তার পাশে একটি স্যাপ চলে আসে তিনি তা বুজতে পারেন নি ,তার সঙ্গী সাথীরে ভয় এ পালিয়ে যাই এবং জুড়ে জুড়ে নরেন্দ্র নাথ কে ডাকতে থাকে ,কিন্তু নরেন্দ্র নাথ ধ্যান এ এমন মগ্ন যে তিনি ,তার সাথীদের ডাক শুনতে পান নি ,কিন্তু  ভাগ্য ভালো সাপটি তাকে কিছু করেনি ।

      নরেন্দ্রনাথের যখন বয়স আট বছর তখন তিনি একবার তার বনদুদের সাথে নৌকা করে মেটিয়াবুরুজে পশুশালা দর্শন করতে গিয়েছিলেন । আসার সময় এক বন্দু নৌকায় বমি করে ফেলে তা নিয়ে মাজিদের সাথে নরেন্দ্রনাথে বন্ধুদের সাথে ঝগড়া লেগে যায় ।ঝগড়া এতই বেড়ে যায় যে মাজীরা দল বেঁধে নরেন্দ্রনাথের বন্ধুদের প্রহার করতে শুরু করে ।পরিস্তিতি খারাপ হয়ে যাচ্ছে দেখে নরেন্দ্রনাথ নৌকা থেকে নেমে ওই সময় দুইজন ইংরেজি সৈনিক ওই দিকে টহল দিয়ে যাচ্ছিলো তাদের একজন কে নরেন্দ্র নাথ তার সাথে ওই স্থানে নিয়ে আসে এবং বন্ধুদের রক্ষা করেন ।

                              নরেন্দ্রনাথের বয়স যখন বারো বছর তখন কলকাতার গঙ্গার সিরাপিস নাম একটি রণতরী এসেছিলো ,এবং অনুমতি নিয়ে সবাই সাধারণ মানুষ কে দেখার সুজুক দেয়া হচ্ছিলো ।তাই নরেন্দ্রনাথ ও তার বন্ধুদের নিয়ে অনুমতি পত্রে সই কোরানুর জন্য গেলেন কিন্তু বালক বলে দারোয়ান তাদেরকে  অফিস এ প্রবেশ করতে দিলো না ।

ধরা পড়লে দুর্বক আছে জেনে নরেন্দ্রনাথ পিছনের সিঁড়ি দিয়ে তিনতালেই উঠে সাহেবের ঘরে প্রবেশ করেন ,এবং ঘরের ভিতর দিয়ে বারান্দায় এসে সাহেবের কাছ থেকে অনুমতি পত্রে সই করিয়ে নেনে ।বুক ফুলিয়ে সদর ফটক দিয়ে বের হবার সময় বিস্মিত দারোয়ান জিজ্ঞাসা করে ,তুমি উপরে গেলে কেমন করে ,নরেন্দ্র নাথ উত্তর দিলেন "আমি জাদু জানি "।

                                শিশুকাল থেকে নরেন্দ্র নাথ অন্যের দুঃখ সহ্য করতে পারতেন না ,কুনো দুঃখিত মানুষ দেখলেই সামনে যা পেতেন তা দেন করে দিতেন ,ঘরে টের পাওয়ার পর তা টাকা দিয়ে তা তাদের কাছ থেকে তাদের কাছ থেকে চুটিয়ে াণ হতো ,তা দেখে মা বিরক্ত হয়ে একদিন দুতলার একটি ঘরে বন্ড করে রাখেন ,তাতেও নিস্তার পাও গেলো না,।নরেন্দ্রনাথ রাস্তায় এক গরিব দুঃখিত মানুষকে পেলেন ,তিনি তখন আলমিরা খুলে মায়ের একটি দামি বস্ত্র জানালা দিয়ে ঢিল দিয়ে ওই দুঃখিত মানুষটিকে দিয়ে দেন ।

নরেন্দ্রনাথ বাল্য কাল থেকে অনেক মেধাবী ছিলেন ।একজন বৃদ্ধ আত্মীয় সন্ধ্যাবেলা তাকে কূলে বসিয়ে গল্প শুনাতেন । সেইসময়ে তিনি পরিতৃপুরুষদের নাম ,দেবদেবীদের স্তোত্র এবং মুগ্দদবুদ বিয়াকরণের সূত্রগুলি তাকে শিকাতেন । পাঁচ বছর বয়সের পূর্বেই মুগ্দদবুদ বিয়াকরণের সব সূত্রগুলি তিনি আবৃতি করতে পারতেন ,ছয় বছর বয়সেই রামায়ণের সমগ্র পালা তার কন্তস্ত্ব হয়ে গিয়েছিলো ।নরেন্দ্রনাথের পড়াশুনার ধরণ ও ছিল অন্য ধরণের ।

ঘরের শিক্ষক আসলে নরেন্দ্রনাথ বই গুলো সব শিক্ষকের হাতে দিয়ে সেইদিন কুন্ অংশ পড়তে হবে বলে দিতেন । শিক্ষক সেই অংশ বানান করে অর্থ করে পরে যেতেন আর নরেন্দ্রনাথ বসে তা মন দিয়ে শুনতেন তাতেই তার পড়া হয়ে যেত ।সহজে ও অল্প সময় মধ্যে পড়াশুনা আয়ত্ত করে নিতেন বলে তার বেশি সময় পড়া শুনার দরকার হতো না । পরীক্ষার আগে তার পড়াশুনার জন্য দুই তিন ম্যাশ যথেষ্ট্য ছিল ।




             


         

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রেরণার গল্প , কৃষকের অলস তিন ছেলে |Motivational Story in Bengali ,Farmer's lazy three sons

একটি গ্রামে এক কৃষক ছিল । সে মধ্যবিত্ত ছিল ,মধ্যবিত্তি হলেও সে অনেক প্ররিশ্রমী ছিল । সে প্ররিশ্রম করতে ভালোবাস্তো ।ঘরে বসে থাকতে চাইতো না । অলসভাবে বসে থাকতে সে ঘৃণা করতো । কৃষকের স্ত্রী - সেও খুব পরিশ্রমী । দিনরাত স্বামীর সংগে সে পরিশ্রম করে । এমন করে দিন যায় । কৃষকের তিন পুত্র । কিন্তু তিনটি পুত্র হলো খুব অলস । খায় - দায় ,গল্প করে ,গান গায় ঘুরে বেড়ায় - কারও কাজে মন নেই এতটুকু । কৃষক তাদের কাজ শেখালো । কি করে মাটি কুপাতে হয় ,মোই দিতে দিতে হয় , চাষ করতে হয় , বীজ বুনতে হয় ,সব শিখলো তারা । কিন্তু কেউ কাজ করতো না । তারা জানতো সব, কিন্তু করতো না কিছু । গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াতে তারা খুব ভালোবাসে । একদিন কৃষক গিন্নি কৃষকে বললো - শুনছ  গো ?- কি বলছো ? দেখছো ছেলেদের কান্ড ? হ্যাঁ ।  ছেলেরা ওরকম কুরে হলে তো দুদিনে বসে খেয়ে সব উড়িয়ে দেবে । তারপর কি হবে ? কৃষক চুপ করে রইলো । কিছুক্ষণ পরে শুধু একটু হেসে বললো - ঠিক সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে । এমন হবে দিন যায় । কৃষক গিন্নি স্বামীর কোথায় চুপ করে থাকে ।  দেখতে দেখতে কৃষক বৃদ্ধ হয়ে পড়লো । তখন সে একদিন স্ত্রীকে ডেকে বললো -...

অনুপ্রেরণামূলক গল্প গৌতম বুদ্ধ Inspirational Story Gautam Buddha

একবার গৌতম বুদ্ধ ,বুদ্ধ ধর্মের শিক্ষা প্রচারের জন্য গ্রাম গ্রাম শহর শহর নিজের শিষ্য দেড় নিয়ে ঘুরছিলেন ,পুরোদিন ঘুরতে ঘুরতে গৌতম বুদ্ধের জল পিপাসা পেয়ে গেলো ,জল পিপাসা এতই বেড়ে গেলো যে তিনি আর সহ্য করতে পড়তে ছিলেন না । তাই তিনি তার একজন শিষ্য কে ডেকে বললেন যে তার অনেক পিপাসা পেয়েছে তাই তার জন্য জল আনার জন্য । শিষ্য গুরুর আদেশে জল আনার জন্য গ্রামের ভিতরে গেলো ,গ্রামের মধ্যে দিয়ে একটি নদী বইছিল । কিন্তু সেই নদীতে গ্রামের সবাই কাপড় ধুইছিলো ,কেউ গরু ,মহিষ কে স্নান করাচ্ছিল ,তাই নদীর জল অপরিস্খার ছিল ,তাই শিষ্য চিন্তা করলো এই জল তো অপররিস্খার তার গুরুদেবের জন্য এই  অপরিস্খার জল নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না ,তাই শিষ্য জল না নিয়ে খালি হাতে চলে গেলো ,গৌতম বুদ্ধা যখন শিষ্য কে খালি হাথে চলে আসতে দেখেন তখন খালি হাতে আসার কারণ জিগ্গেস করেন ,তখন শিষ্য পুরো কাহিনী বলেন ।  এইদিকে গুরুদেবের পিপাসাতে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে ,গৌতম বুদ্ধা তখন আরেকজন শিষ্যকে জল আনার জন্য বলেন তখন সেই শিষ্য একটি   মাটির পাত্রতে পরিস্খার জল নিয়ে আসে ,তা দেখে গৌতম বুদ্ধা অভাক হয়ে গেলেন এবং এব...

গৌতম বুদ্ধের অনুপ্রেরণার কাহিনী । জীবন বদলে দেবে এই কাহিনী

  এক গরিব দুঃখী বেক্তির জীবন পরিবর্তনের কাহিনী ।.   আমরা জীবনে এই নিয়ে দুঃখিত থাকি যে  ইহার কারণ কি ?আমরা সবাই এটাই সবসময় মনে করে থাকি ,আমি  অন্যদের থেকে অনেক দুঃখিত ,অনেক কষ্ট করছি ,জীবনে কষ্ট সবচেয়ে বেশি আমার । অন্যরা আমার থেকে অনেক সুখে আছে ,শান্তিতে আছে , কিন্তু আমাদের এই চিন্তা ভুল । ভগবান আমাদের জন্মের সাথে সাথে জীবনে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার জন্য যা প্রয়োজন সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন । ভগবান গৌতম বুদ্বের এই গল্প থেকে বুজতে পারবো । গৌতম বুদ্ধ  একবার  তার শিষ্যদের সাথে একটি গ্রামে গিয়েছিলেন । সেই গ্রামের লোকেরা তাদের সমষ্যা নিয়ে গৌতম বুদ্ধের কাছে যেত এবং তাদের সমস্যার সমাধান নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফায়ার যেত । ওই গ্রামের রাস্তার ধরে একটি লোক বসে থাকতো এবং গৌতম বুদ্বের কাছে আসা প্রতিটি লোককে খুব মনোযোগ সহকারে  লক্ষ্য  করতো , সে এটা দেখে খুব অবাক হতো যে লোকতো  আসে অনেক মন খারাপ নিয়ে , কিন্তু যখন তারা গৌতম বুদ্ধের দর্শন করে ফিরত তারা অনেক খুশি থাকত , এবং মুখে থাকতো একটা হাসি ।  তাই গরিব ব্যক্তিটি মনে মনে ভাবলো যদি আমিও আমার সমস্যার কথা গৌত...