আমাদের জীবনে যখন কোনো অশান্তি ,সমস্যা আসে আমরা নিরাশ হয়ে যাই ,ভেঙ্গে পরি। মনে হয় সুখ শান্তি আমাদের জীবনে নেই ,জীবনের সবকিছু শেষ । কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে সুখ দুঃখ জীবনের একটা অংশ ,আজ সুখ আছে তো কাল দুঃখ ,পরিবর্তন সংসারের নিয়ম ।
ভগবান শ্রী কৃষ্ণ বলেছিলেন "পরিবর্তন সংসারের নিয়ম ",প্রকৃতিতে যে ভাবে দিন রাত্র হয় ,সে ভাবে মানুষের জীবনে ও সুখ দুঃখ আসে ,কারণ আমরা মনুষ্য প্রকৃতির একটা অংশ ।
যে ভাবে দিন হলে আমাদের আলোর প্রয়োজন হয় না ,কিন্তু যখন রাত্রি নেমে আসে তখন আমাদের ঘর ,রাস্তা আলোকিত করার জন্য আলো জ্বালানির প্ৰয়োজন হয় ,সেই ভাবে আমাদের জীবনে যখন সুখ ,শান্তি থাকে তখন আমরা দুঃখের কথা ভুলে যাই ,কিন্তু যখন দুঃখ অশান্তি আসে আমরা নিরাশ হয়ে যাই ,কিন্তু সেই দুঃখের সময় মনকে নিরাশ না করে ,শান্ত হয়ে সেই সমস্যা দূর করার পথ বের করা ,নিরাশ না হয়ে আমাদের জীবনের সমস্যার কারণ খুঁজে বের করা দরকার ।মনে রাখতে হবে যে মানুষের কাছে কিছুই অসম্ভব না ।
একটি সত্যি ঘটনার উপর গল্প বলি |
একটি গ্রামে রামু নামে একটি ছেলে থাকতো ,ছেলেটি পড়াশুনাতে ,খেলাধুলাতে ভালো ছিল ।তার পরিবারে মা,বাবা,এক বোনের এক সুন্দর পরিবার ,রামুর বাবা একজন সবজি ব্যপারি ছিলেন ,সব্জি বিক্রি করে যা টাকা রুজগার করতেন তাদের সংসার ভালো এই চলতো । একদিন হঠাৎ রামুর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন
https://amzn.to/2JZTXsr
,ডাক্তার কাছে নিয়ে যাওয়া হলো রামুর বাবাকে ,ডাক্তার বলে দিলো যে তিনি আর কাজ কর্ম করতে পারবেন না ।অসুস্থতার জন্য রামুর বাবা আর বাজারে সবজি বিক্রি করার জন্য যেতে পারেন না ,যা জমানো টাকা পয়সা ছিল তা রামুর বাবার চিকিৎসা তে সব খরচ হয়ে যায় ,এদিকে রামুর আর তার বোনের পড়াশুনার খরচ,রামুর বাবার ওষুদের খরচ ,সংসারের খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে পরে । উপায় না দেখে রামুর মা প্রথমে পাড়াপ্রতিবেশীদের ,আপনজনের কাছ থেকে টাকা ধার নেন ,তারপর আর কেউ টাকা ধার দিতে মানা করে দেয় ,এতে রামুর পড়াশুনা তো দূরের কথা ঘরে একবেলা চাল যুগার করা কষ্ট হয়ে যায় ।
রামুর পড়াশুনার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল ,কিন্তু তার এই অভাব অনটনে পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে তা সে মেনে নিতে পারছিলো না ,তাই সে মনে মনে এই সমস্যা টি থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজছিলো ,সে সব সময় বসে বসে চিন্তা করতে থাকে কি করা যায় ।
তাই একদিন সিদ্ধান্ত নিলো সে এখন টি তার বাবার মতো সবজি ও বিক্রি করবে তার সাথে পড়াশুনা ও করবে ।রামু তখন ক্লাস দশম শ্রেণীতে পড়তো ,তার এই কথা তার মা কে বললো ,কিন্তু সমস্যা হলো সবজি শহর থেকে কিনে এনে বিক্রি করতে হবে তার জন্য টাকার দরকার । রামু তার একজন বন্দুর কাছে গেলো এবং সব কথা খুলে বললো ,আর কিছু টাকা ধার দেয়ার জন্য বললো ,আর এক মাসের মধ্যে তার টাকা ফেরত দিয়ে দেবে ,সেই সর্ত্তে টাকা নিয়ে আসে ।
তারপর দিন রামু সকালে খুব ভোরে উঠে শহরে চলে গেলো সবজি ক্রয় করার জন্য ,সবজি কিনে নিয়ে আসে ,সবজি রেখে স্কুল চলে যায় ,বিকেলে স্কুল থেকে এসে বই রেখে খাওয়া দাওয়া করে বাজারে চলে যায় সবজি বিক্রি করার জন্য ,সবজি বিক্রি করে রাত্রে ঘরে আসে ,খাওয়া খেয়ে আবার পড়তে বসে,এক দুই ঘন্টা পড়াশুনা করে ঘুমিয়ে পরে ,কারণ আবার সকালে উঠে তাকে শহরে সবজি ক্রয় করতে যেতে হবে ।
এই ভাবে রামুর দিন চলতে থাকে ,ধীরে ধীরে রামুর ঘরের অভাব দূর হয়ে গেলো
,তার বোন আবার স্কুল যেতে শুরু করে ,তার অসুস্ত বাবার চিকিৎসা ভালো ভাবে চলছে ,যাদের থেকে টাকা নিয়েছিল সবাইকে দিতে শুরু করলো,তার বন্দুর টাকা ও কথা মতো ফেরত দিয়ে দিলো ,কয়েকবৎসর পর রামু একজন নামি দামি ব্যবসায়ী হয়ে গেলো ,এখন তার গ্রামে তিন তিনটে সবজির দুকান ,সবগুলি দুকানে দেখাশুনা করার জন্য লোক রেখেছে ,তার সাথে সাথে তার গ্রাজুয়েশন ও কমপ্লিট করেছে ।
তাই জীবনে যখনি সমস্যা আসে ,তখন ভয় না পেয়ে,নিরাশ না হয়ে ,সেই সমস্যা থেকে বের হওয়ার পথ বের করতে হয় ।মনে রাখতে হবে যে সুখ দুঃখ জীবনের একটা অংশ ,আজ দুঃখ থাকলে কাল সুখ আসবে ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন